বর্তমান বিশ্ব ডিজিটাল-এ কথা তা আমরা সবাই কম-বেশি জানি। আর ডিজিটাল দুনিয়ায় সব কিছুই ডিজিটাল। কোনো কিছুই আর আগের মতো নেই, সবকিছুই হয়ে গেছে এখন ডিজিটাল। আর ডিজিটাল দুনিয়ার ডিজিটাল ছোঁয়াতে সবকিছুতেই এসেছে এখন আধুনিকতার ছোঁয়া।
আর সেই আধুনিকতার ছোঁয়া সবচেয়ে বেশি পরেছে ফেসবুকের উপর। আর সেই ফেসবুককে কাজে লাগিয়েই মানুষ এখন টাকা আয় করছে, ফেসবুকে মার্কেটিং করছে। জেনে নিন ফেসবুক মার্কেটিং সম্পর্কে।
হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয় দুনিয়ার অন্যতম শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে একটি। এই বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিটি শিক্ষার্থীই ব্রেইন যেনো আটলান্টিক মহাসাগরের মতো বিশাল আর সেই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের চিন্তাভাবনা যেনো ছিলো চীনের মহাপ্রাচীরের মতো সুবিশাল।
তেমনি, হার্ভার্ডে কম্পিউটার প্রযুক্তির প্রেমে পাগল হওয়া এক শিক্ষার্থী ছিলেন নাম তার মার্ক জুকারবার্গ। এখন আমাদের কাছে এই মার্ক জাকারবার্গ নামটি বেশ পরিচিত।
যদি ও একসময় এই মার্ক পরিচিত ছিলো শুধু তার ক্যাম্পাসের বন্ধু-বান্ধবদের মহলে। মূলত হার্ভার্ডের শিক্ষার্থীদের অনলাইনে নেটওয়ার্ক সৃষ্টির লক্ষ্যে ফেসবুকের আবিষ্কার। পরবর্তীতে এই ফেসবুক বিশ্বজুড়ে পরিচিত লাভ করে অতি দ্রুততার সাথে। হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের সেই মার্ক জুকারবার্গের হাত ধরে আসা ফেসবুক এখন ব্যবসার এক বড় মাধ্যম।
ফেসবুক হচ্ছে একটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম। এর মাধ্যমে আমরা বন্ধু-বান্ধবদের সাথে যোগাযোগ করতে পারি, ছবি আদান প্রদান করতে পারি আর ও ইত্যাদি ইত্যাদি কাজ করতে পারি। ২০০৪ সালে হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী মার্ক জুকারবার্গের হাত ধরে এই ফেসবুক প্রতিষ্ঠিত।
ফেসবুক মার্কেটিং:
ফেসবুক মার্কেটিং এটি ডিজিটাল মার্কেটিং এর একটি অংশ। সোশ্যাল মিডিয়া গুলোর মধ্যে ফেসবুক অন্যতম শুধু অন্যতম না জনপ্রিয়তার শীর্ষে ও ফেসবুক এক নাম্বার, সোশ্যাল মিডিয়াগুলোর জনপ্রিয়তার মধ্যে ফেসবুক রয়েছে শীর্ষে। ফেসবুকের মাধ্যমে কোন প্রোডাক্ট বা সার্ভিস প্রচার করে দেয়াকেই ফেসবুক মার্কেটিং বলে।
এক কথায় ফেসবুকে যে বিজ্ঞাপন দেয়া হয় তাকেই ফেসবুক মার্কেটিং বলে। যে কোন ধরণের পোস্ট ফেসবুকে টাকার মাধ্যমে দেয়া যায়, যেটা স্পন্সর হিসাবে ফেসবুক ব্যবহারকারীর নিউজফিডে শো করে। এ ধরণের পোস্টগুলো সাধারণত আপনার নিউজফিডে স্পন্সরড পোষ্ট হিসেবে এসে থাকে।
একটি ফেসবুক পেজের মাধ্যমে পোস্ট অথবা আপনি বিভিন্ন অডিও, ভিডিও, টেক্সট এর মাধ্যমে আপনার প্রচার চালাতে পারেন। আর আপনি চাইলে একজন এক্সপার্টের মাধ্যমে ও এই এডসের কাজটা করাতে পারেন।
বর্তমান বিশ্বে সবচেয়ে জনপ্রিয় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম হচ্ছে ফেসবুক। ফেসবুক এখন কোটি কোটি মানুষ ও ব্যবহার করছে এমনকি বাংলাদেশে ও জনপ্রিয় ফেসবুক। তাই আপনি সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং করলে অবশ্যই ফেসবুক মার্কেটিং করতে হবে।
ফেসবুক মার্কেটিং এ বাংলাদেশে সুবিধা কি কি?
১. বাংলাদেশে কোটির উপর মানুষ ফেসবুক ব্যবহার করছে। সেখান থেকে যদি আপনার কাছ থেকে হাজার হাজার করে লাখ লাখ মানুষ আপনার প্রোডাক্ট সার্ভিস নেয় তাহলে কেমন লাগবে? এ কারণে আপনি চাইলে ফেসবুক পেজ পেইড প্রমোট পেজের পোস্ট বুস্ট করতে পারবেন।
২. নির্দিষ্ট বয়স, লিঙ্গ, ভেদে আপনি পেজের মাধ্যমে প্রমোট করতে পারবেন। যেমন: আপনি যদি ১৬-২৫ বছর বয়সীদেরকে টার্গেট করে কোনো স্মার্টফোন কিংবা বডি স্প্রে এর প্রচার করেন তাহলে অনেকেই কিনবে আপনার প্রোডাক্ট।
তবে আপনি যদি বডি স্প্রে এর প্রমোটে ৫০-৬০ বছর বয়সীদেরকে টার্গেট করেন তাহলে সে পরিমানে সেল আসবে না। আবার আপনি যদি লিঙ্গ টার্গেট করে মেয়েদের অথবা মহিলাদেরকে টার্গেট করলেন কিন্তু প্রোডাক্ট প্রমোট করলেন পাঞ্জাবী।
ছেলেদের তাহলে ও তুলনামূলক কম সেল আসবে। অন্যদিকে এই লকডাউন পরিস্থিতিতে অনেকেই এখন স্মার্টফোন কিনছে অনলাইন ক্লাসের জন্য। আপনি পেজের মাধ্যমে স্মার্টফোন বিক্রি করতে পারেন সেক্ষেত্রে ফেসবুকে মার্কেটিং করে বেশ ভালো উপার্জন করতে পারবেন আপনি।
এরপর এখন চলছে শীতে আর শীতে সবার চোখ থাকে সুন্দর সুন্দর হুডি, ট্রাকশ্যুট, জ্যাকেটের উপর। আপনি এসবের ক্ষেত্রে বাংলাদেশি যুবক-যুবতীকে টার্গেট করে প্রমোট দিতে পারেন। শুধু প্রমোট এর আগে ভালো টার্গেট, বয়স ঠিক মতো করে সিলেক্ট করে এরপর প্রমোট করলে আপনার জন্য বেশ ভালো একটা ইনকাম জেনারেট হবে।
৩. যেকোনো নির্দিষ্ট এরিয়ার মানুষকে টার্গেট করে প্রমোট করতে পারবেন। যেমন: মনে করেন আপনার ব্যবসা শুধু ঢাকাতে ঢাকার বাহিরে আপনার ডেলিভার, কুরিয়ার সার্ভিসের ব্যবস্থা করা সম্ভব নয় সেক্ষেত্রে আপনি সারা দেশজুড়ে প্রমোট না করে শুধুমাত্র ঢাকার মানুষকে টার্গেট করে প্রমোট করতে পারবেন। মনে করেন, আপনি বগুড়া থাকেন আর বগুড়ার দই অনেক জনপ্রিয়। আপনি চাইলে বগুড়ার দই বিক্রির সার্ভিস ফেসবুকে পেজের মাধ্যমে তুলে ধরতে পারেন।
৪. যেকোনো সময়ে আপনার কোনো প্রোডাক্ট সার্ভিস ভাইরাল হয়ে যেতে পারে তাই ফেসবুক অন্যতম এবং সেরা। মনে করুন আপনি স্মার্টফোন বিক্রি করেন অনলাইনে ফেসবুক পেজের মাধ্যমে, সাধারণত নতুন নতুন স্মার্টফোনগুলো একদম শুরুর দিকে সারা বাংলাদেশে ছড়িয়ে যাওয়ার আগে আপনার কাছে যদি সেই স্মার্টফোনটা এসে যায় তখন অনেকেই হুমড়ি খেয়ে অর্ডার করবে আপনার কাছ থেকে।
এরপর মনে করুন আপনি জার্সি বিক্রি করেন, সাধারণত ইউরোপীয়ন ক্লাব ফুটবলের জার্সি মার্কেটে বেশ জনপ্রিয় এখন ইউরোপীয়ান কোনো ক্লাবের জার্সি বাংলাদেশে আপনার কাছে সবার আগে যদি আসে তখন মানুষ আপনার কাছ থেকে জার্সি কিনতে বাধ্য।
৫. মনে করুন আপনি খুব ভালো ছবি আঁকতে পারেন, অনেক সুন্দর স্কেচ আঁকতে পারেন এখন এটা হচ্ছে আপনার একটা স্কিল। আপনি প্রথমে একটি ফেসবুক পেজ খুলবেন সেখানে আপনার বন্ধু-বান্ধব অথবা পছন্দের মানুষের আঁকা স্কেচ বা ছবিগুলো শেয়ার করুন।
এরপর আপনি সার্ভিস দেন তখন অনেকেই আপনার কাছ থেকে নিজেদের পছন্দ মানুষ কিংবা নিজের জন্য স্কেচ বা ছবি আপনাকে দিয়ে আঁকাতে চাইবে তখন সে কাজের বিনিময়ে আপনি টাকা নিবেন। যখন আস্তে আস্তে কিছু লাইক যেমন: ১০০০ লাইক আসবে তখন আপনি আপনার পেজকে প্রমোট করতে পারবেন।
অথবা নিজের পেজের একটি পোস্টকে বুস্ট করতে পারবেন এবং আপনার সেই পোস্ট দেখে অনেকেই আপনার কাছ থেকে ছবি আঁকাবে, স্কেচ ও আঁকাবে। আর তখন আপনি এই ছবি আঁকা, স্কেচ করেই টাকা উপার্জন করতে পারবেন।
৬. মনে করুন আপনি রাজশাহীতে থাকেন রাজশাহীতে গ্রীষ্মকালীন আম সারা দেশ জুড়ে পরিচিত। রাজশাহীতে আপনাদের যদি আমের বাগান থাকে কিংবা আমের বাগানের মালিকের সাথে পরিচয় সেখান থেকে ভালো মানের আম কিনে আপনি ফেসবুকে মার্কেটিং করে হাজার হাজার টাকা আয় করতে পারবেন এবং এটা সম্ভবও।